লিডস থেকে সৈয়দ আনোয়ার রেজা,
ঈদুল ফিতর শেষ হলেও তার আনন্দ যেন এখনও ছড়িয়ে আছে লিডসের বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে। বহুজাতিক এই আধুনিক শহরের অলিগলিতে ফুটে উঠেছে বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক একতার অপূর্ব চিত্র। বিশেষত বাংলাদেশি সম্প্রদায় তাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আচার-অনুষ্ঠান এবং আন্তরিকতা দিয়ে লিডসের সমাজে এক অনন্য সৌন্দর্য যোগ করে চলেছে।
গত সোমবার বাংলাদেশি কমিউনিটি সেন্টারের (বিসিএল) পরিচালনা পর্ষদের এর উদ্যোগে আয়োজিত হয় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। কমিউনিটি সেন্টারে দুপুর ১টা থেকে শুরু হওয়া এই মিলনমেলায় অংশ নেন শিশু, তরুণ, প্রবীণসহ নানা বয়সী প্রবাসীরা।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সম্পাদক জায়েদ আলী। শুভেচ্ছা বক্তব্যে বিসিএল সভাপতি ওয়েছ মিয়া বলেন, বিগত বছরের মতো এবারও আমরা একত্রিত হতে পেরেছি! এই ভ্রাতৃত্বের বন্ধন প্রমাণ করে যে যত দূরেই থাকি না কেন, আমাদের সংস্কৃতি ও পারস্পরিক সম্পর্ক আমাদের একত্রিত রাখে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন লিডস সিটি কাউন্সিলর মতিন আলী,শাহজালাল জামে মসজিদের খতীব ও ইমাম মাওলানা সাদেকুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সালেহ আহমেদ এবং ইয়ুথ ক্লাব ও পূরবী সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আবুল আবেদীন।
বক্তারা প্রবাসে বাংলাদেশের সংস্কৃতি রক্ষায় নতুন প্রজন্মের ভূমিকার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন ঈদে নতুন প্রজন্মদের জন্য জীবন মুখী এবং রঙিন উৎসব আয়োজন অত্যন্ত জরুরি ।আগামীতে নিয়মিত আয়োজন করা গেলে প্রবাসেও আমাদের সংস্কৃতি টিকে থাকবে এবং বিকশিত হবে।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া নতুন প্রজন্ম মনে করছে,তারা তাদের শিকড় ও সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে ।সেজন্য পারিবারিক ও সংস্কৃতিমূলক আয়োজন অতি জরুরি ।
ভবিষ্যতে পরিবার-পরিজনসহ এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হলে প্রবাসে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের মধ্যে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ভাষা ও মূল্যবোধ আরও গভীরভাবে রোপিত হবে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিসিএলের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য দব্বির মল্লিক, জালাল আহমেদ, বদর আহমেদ, শাহ্ ইয়াওর মিয়া এবং আনোয়ার গণি ,সৈয়দ কবির আহমেদ ও বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ।
উল্লেখ্য যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি সম্প্রদায় দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১.১% হলেও লিডসে এই হার তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম। তবে সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ, সাংগঠনিক বিকাশ ও পারস্পরিক একতা এই ব্যবধান দ্রুত কমিয়ে আনছে। ব্যবসা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা ইতোমধ্যে লিডস শহরের গর্বে পরিণত হয়েছেন।
