মতামত

লিডস বাংলা প্রেসক্লাবের গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনা: সমাজ থেকে অপরাধ দূর করতে চাই সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা।

কমিউনিটিতে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলছে অপরাধ প্রবণতা। কিশোর- তরুণরা বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে। অসামাজিক আচরণ ও অপরাধমূলক কর্মকান্ড রুখতে প্রয়োজন পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কমিউনিটিসহ অভিভাবকদের সম্মিলতি প্রচেষ্টা। সম্প্রতি সাত-আটজনের সংঘবদ্ধ একটি দুস্কৃতি চক্র চ্যানেল এস এর লিডস প্রতিনিধি মোহাম্মদ জাকারিয়ার গাড়ি ভাংচুর ঘটনার প্রতিবাদে এবং সামাজিক সচেতনতা তৈরি করতে গত  সোমবার এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে লিডস বাংলা প্রেস ক্লাব। লিডস বাংলাদেশী কমিউনিটি সেন্টারের সহযোগিতায় আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন সেন্টারের সভাপতি হাজী ওয়ায়েস মিয়া। লিডস বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এমজি কিবরিয়ার সঞ্চালনায় বৈঠকে বক্তব্য রাখেন লিডস সিটির সাবেক লর্ড মেয়র কাউন্সিলর আজগর খান, কাউন্সিলর মোহাম্মদ রফিক আহমেদ, কাউন্সিলর আরিফ হোসাইন, কাউন্সিলর সালমা আরিফ, কাউন্সিলর লিউক ফার্লি, কাউন্সিলর প্রার্থী আসগর আলী, আবদুল মতিন এবং নিকেলে মানাকা। অনুষ্ঠানে কমিউনিটির পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশ নেন লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর মুসফিক উদ্দিন, সাংবাদিক মাহমুদ আজহার, কমিউনিটি নেতা আফজাল হোসাইন, শাহীন আহমেদ সেলিম, শামীম আহমেদ, জাহেদ আলী,  মল্লিক দবির মিয়া, সুয়েজ আলী, ওয়াহিদ মল্লিক, আনোয়ার গণি, আরস আলী, আজগর খান, জাহাঙ্গীর আলম, শাহ আবু বকর প্রমুখ। সভায় চ্যানেল এস এর লিডস প্রতিনিধি মোহাম্মদ জাকারিয়া মুখোশপরা সন্ত্রাসীদের দ্বারা তার গাড়ি ভাংচুরের ঘটনার ভয়ঙ্কর বিবরণ উপস্থাপন করেন।

বিবরণ শোনে সাবেক লর্ড মেয়র আজগর খান বলেন,  সাংবাদিক মোহাম্মদ জাকারিয়ার গাড়ি যেভাবে ভাংচুর করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনিয়। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে,  সেই লক্ষে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। লিডসে সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড কমাতে পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কমিউনিটির প্রতিনিধিদের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে।

কাউন্সিলর মোহাম্মদ রফিক বলেন, এই সমস্যা শুধু লিডস এ নয়, বরং পুরো যুক্তরাজ্য জুড়েই অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে। এটা প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

কাউন্সিলর সালমা আরিফ  কথা দেন, লিডস এর নানামুখী সমস্যা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে তিনি আলোচনা করবেন। কাউন্সিলর লিউক ফার্লি বলেন, এটা কোনো নির্দিষ্ট কমিউনিটির সমস্যা নয়, এটা সবারই সমস্যা। এ জন্য চাই সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস।

কাউন্সিলর আরিফ হোসাইন কোনো অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় না গিয়ে কাউন্সিলর বা পুলিশকে আগে জানাতে অনুরোধ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে হাজি ওয়ায়েস মিয়া লিডস বাংলা প্রেস ক্লাবকে সমাজ সচতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতেও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এসব কাজে সাংবাদিকরা কমিউনিটির পাশে থাকবেন।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক লিডস বাংলা প্রেস ক্লাব সভাপতি  এমজি কিবরিয়া বলেন, স্থানীয় কাউন্সিরগণ ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ সম্মিলিতভাবে পুলিশকে তথ্য সহায়তা ও চাপ দিয়ে লিডসের হেয়ারহিলস, গিবটন, চ্যাপলটাউনসহ বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ দমনে আরও সজাগ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

অধ্যাপক মুসফিক উদ্দিন বলেন, অভিভাবক, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের পাশপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ যদি একসঙ্গে কাজ করে তাহলে অপরাধ প্রবণতা অনেকাংশে কমে যাবে।

সাংবাদিক মাহমুদ আজহার বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিপথগামী তরুণদের সুপথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে পারিবারিক বন্ধন ও সন্তানদের সঙ্গে খোলামেলা বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে। সন্তানদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত করার পাশাপাশি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।

এ সম্পর্কিত অন্যান্য সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Close