বাংলাদেশ

র‍্যাবের ব্রিফিং: সাংবাদিক নাদিম খুন হন বাবুর পরিকল্পনাতেই

জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর পরিকল্পনাতেই হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আজ শনিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে ইউপি চেয়ারম্যান বাবু তার সন্ত্রাসী গ্রুপের মাধ্যমে সাংবাদিক নাদিমকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেয়ার পরিকল্পনা করে। এর অংশ হিসেবে বকশীগঞ্জ উপজেলায় পাটহাটি এলাকায় তার সন্ত্রাসী গ্রুপ দিয়ে হামলা চালায়।

শনিবার সন্ধ্যায় কাওরান বাজার র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিক নাদিমকে হত্যার পরিকল্পনাকারী ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি। পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থেকে তাদের ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলেন- মনিরুজ্জামান মনির ওরফে মনিরুল (৩৫), জাকিরুল ইসলাম (৩১), রেজাউল করিম (২৬)।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানায়, সাংবাদিক নাদিম ইউপি চেয়ারম্যান বাবুর বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে রিপোর্ট করায় সে ক্ষিপ্ত হয়। প্রথমে বাবু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে নাদিমের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। ওই মামলা ময়মনসিংহ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত খারিজ করে দেয়। এই মামলা খারিজ হলে নাদিম তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। এতে গ্রেপ্তারকৃত বাবু আরও ক্ষিপ্ত হয়।

খন্দকার আল মইন বলেন, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে বাবু তার সন্ত্রাসী গ্রুপের মাধ্যমে সাংবাদিক নাদিমকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে। এর অংশ হিসেবে বকশীগঞ্জ উপজেলায় পাটহাটি এলাকায় তার সন্ত্রাসী গ্রুপ অবস্থান করছিল।

বাবু ঘটনাস্থলের কাছে অবস্থান করে পরিকল্পনা করছিল ও নির্দেশ দিচ্ছিল।
প্রথমে রেজাউল দৌড়ে গিয়ে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে নাদিমকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে অন্য সদস্যরা ঘটনাস্থলে দৌড়ে যায়। তখন মনির, জাকিরসহ আরও বেশ কয়েকজন সাংবাদিক নাদিমকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। তার সঙ্গী এক সাংবাদিককেও মারধর করে। সাংবাদিক নাদিমের চিৎকারের কারণে এলাকাবাসী ও অন্যান্য সাংবাদিক তাকে বাঁচাতে আসে এবং ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পরপরই ইউপি চেয়ারম্যান বাবু আত্মগোপনে চলে যায় উল্লেখ করে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, শনিবার সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে আটক করে র‌্যাব। আর রেজাউলকে গতকাল সন্ধ্যায় বগুড়া থেকে আটক করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল, মনির এবং জাকির মাহমুদুল হাসান বাবুর সন্ত্রাসী গ্রুপের অন্যতম সহযোগী। গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল দৌড়ে গিয়ে নিহত নাদিমকে ধাক্কা দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলেই বাবুর নির্দেশে তারা নাদিমকে বেদম প্রহার করতে থাকে। একপর্যায়ে পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায় এবং এলোপাতাড়ি আঘাত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ইতিপূর্বে তাদের বিরুদ্ধে জামালপুরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও মারামারির মামলা রয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে বিস্তারিত জানা যাবে।

এ সম্পর্কিত অন্যান্য সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Close